আপনি জানেন কি বাংলাদেশের ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী কে? কিংবা কোন ফাস্ট বোলার শেষবার এক ইনিংসে পাঁচ উইকেটে শিকার করেন? প্রথম প্রশ্নের উত্তর হল মাশরাফি মর্তুজা (৭৮ উইকেট)। দ্বিতীয় উত্তরটি ২০১৩ সালে রবিউল ইসলাম শেষবার ৫ উইকেট শিকার করেন। এই দীর্ঘ সময়ে মাশরাফি, রবিউলের কীর্তি স্পর্শ করার মত কোনো ফাস্ট বোলার বাংলাদেশ ক্রিকেটে আবির্ভাব হয়নি। এই দীর্ঘ সময়ে ফাস্ট বোলাররা যে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি তা বলাই যায়। কিন্তু এই দায়টা শুধুই কি বোলারদের?
বেশিরভাগ খেলোয়াড়রা তাদের সেরা পারফরম্যান্সগুলো করে ঘরের মাঠে। সেই ভালো পারফর্মেন্সের আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়েই তারা বিদেশের মাটিতে ভালো কিছু করে। বিদেশে ভাল পারফরম্যান্স করার মুল ভিত্তিটা দেশের মাটিত গড়তে হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। যখন কোন দল টেস্ট সিরিজ খেলতে আসে তখন দেখা যায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে স্পিনিং ট্র্যাক তৈরী করা হয়। এই স্পীন ট্র্যাকে ফাস্ট বোলাররা তেমন কোন সুবিধা পায় না বলে পারফর্মেন্সও নজর কাড়তে পারে না। অতঃপর পরবর্তীতে দলেও সুযোগ হয় না আর। পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায়, ঘরের মাঠে শেষ পাঁচ টেস্টের দুটিতেই পেসারবিহীন একাদশ নিয়ে দল সাজানো হয়। বাকি তিন টেস্টের কখনো একজন পেসার, কখনো দুইজনকে নিয়ে একাদশ সাজাতেও দেখা যায়। এর মধ্যে পেসাররা প্রথম ইনিংসে বল করতে পারলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ ওভারও হাত ঘুরানোর সুযোগ পায় না।
অর্থ্যাৎ দেশের মাটিতে পেসাররা যতটুকু সুযোগ পান সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদেশের মাটিতে ভালো ফলাফল আশা করাটা অযৌক্তিক। ঘরের মাটিতে স্পিনারদের প্রাধান্য দিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজানো হয় এবং তা দিয়ে এশিয়ার বাইরের দলগুলোর সাথে ম্যাচও জিতা যায়, কিন্তু পেসারদের অবহেলা করার কারণেই হার মানতে হয় আফগানিস্তানের মত নবাগত দলের কাছে। ফাস্ট বোলারদের যদি দেশের মাটিতে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে বল করার সুযোগ না দেওয়া হয় তবে বিদেশের মাটিতে ভালো পারফর্মেন্স করা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
মূলত দেশের মাটিতে ফাস্ট বোলারদের ম্যাচ কম খেলার প্রভাবটা পড়ে পুরো দলের ওপরই, পরবর্তীতে ঘরের বাইরের সিরিজগুলোয়। যার বড় প্রমাণ বিদেশের মাটিতে শেষ ১০ টেস্টের ১০টিতেই হার, এর মধ্যে সাতটিতে আছে আবার ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা।
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ
৪৯ তম আবর্তম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা